নিজের বাড়িতে কোয়রান্টিনে থাকলে, তার প্রমাণ দিতে হবে প্রতি ঘণ্টায়, সেলফি তুলে। একটি নির্দিষ্ট মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তা পাঠিয়ে দিতে সরকারের কাছে। এই নির্দেশ অমান্য করলে নিজের বাড়ির স্বাচ্ছন্দ্য ছেড়ে থাকতে হবে সরকারি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে। এছাড়া বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিরা যাতে কেউ মিথ্যা বলতে না পারেন তাই এই সিদ্ধান্ত। সোমবার রাজ্যবাসীদের জন্য এমন কড়া নির্দেশিকা জারি করলো কর্নাটক।
করোনা ভাইরাস নিয়ে এখনও অনেকে সচেতন নয়, ঘরবন্দি না থাকতে পেরে বাইরে বেরচ্ছেন অনেকেই। তাই শায়েস্তা করতে কড়া সিদ্ধান্ত নিচ্ছে রাজ্য সরকার। হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা সাধারণ মানুষ যারা এই নিয়ম মানবেন না তাঁদের বাড়িতে সরকারের তরফে একটি দল পৌঁছবেন।

বিদেশ থেকে ফিরে বাধ্যতামূলক ভাবে নিজের বাড়িতে ১৪ দিনের কোয়রান্টিনে থাকার নির্দেশও মানছেন না বহু মানুষ। এ বিষয়ে বার বার সচেতন করা সত্ত্বেও তা কানে তুলছেন না অনেকে। দিন কয়েক আগেই বেঙ্গালুরুর ১০ ব্যক্তি নিজের বাড়িতে কোয়রান্টিনের নির্দেশ অগ্রাহ্য করে পালিয়ে যান। এর পর তল্লাশি চালিয়ে শহর থেকে তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। বেঙ্গালুরুর পুর কমিশনার বি এইচ অনিল কুমার জানিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে। চলতি মাসে ফের একই ধরনের ঘটনা ঘটে মেঙ্গালুরুতে। সেখানকার হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান এক করোনা-সন্দেহভাজন। বার বার এ ধরনের ঘটনা ঘটায় বাধ্য হয়েই সেলফি তোলার নির্দেশ জারি করেছে রাজ্য প্রশাসন।

সেলফি তুলতে কে না ভালবাসে তবে সেই সেলফি যদি প্রমাণ হয় হোম কোয়ারেন্টাইনদের তাহলে? হ্যাঁ, কর্ণাটক সরকার এমনই নিয়ম তৈরি করলেন হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের জন্য। কর্ণাটকের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডাঃ কে সুধাকরের কথায়, ”যারা হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন তাদের সকলকে নিজের মোবাইল থেকে প্রতি ঘণ্টায় সেলফি তুলে পাঠাতে হবে রাজ্য সরকারের একটি সাইটে। এই নির্দেশিকার অমান্য করলে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকা ব্যক্তিদের কাছে বা তাদের বাড়িতে পৌঁছে যাবে রাজ্য সরকারের নির্দিষ্ট একটি দল। তারা তখন ওই ব্যক্তিকে সরকারের কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে নিয়ে যাবে। হোম কোয়ারেন্টাইনের নাম করে যাতে কেউ বাইরে ঘুরতে না পারে বা সংক্রমণ ছড়াতে না পারে তাই পদক্ষেপ।”
কর্ণাটকের মেডিক্যাল এডুকেশন মন্ত্রী ডঃ কে শুধাকর এমনটাই জানিয়েছেন। ১৪ দিনের জন্য প্রতিদিন ১৫টি করে সেলফি তুলতে হবে। মোট ২১০টি সেলফি তুলতে হবে কোয়ারেন্টাইন পিরিয়ডে। রাত ১০টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত অর্থাৎ ঘুমনোর সমইয় বাদ রেখে সবসময় এই কাজ করতে হবে বলেই উল্লেখ করা হয়েছে, অন্যথা গণ কোয়ারেন্টাইন সেন্টারে পাঠানো হবে। এছাড়াও বলা হয়েছে, সেলফিতে লোকেশনের উল্লেখে থাকবে যা সরকারকে সেই ব্যাক্তির উপস্থিতির জানান দেবে। কর্ণাটক সরকারের ফটো ভেরিফিকেশন টিম হোম কোয়ারেন্টাইন্ড ব্যাক্তির ছবি দেখবেন। ভূল ছবি পাঠানো হলে তাঁকে গণ কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হবে।