আমাদের সমাজে পতিতা মানেই তাঁদের অন্য নজরে দেখা হয়। তাঁদের জীবন যাত্রাও আর পাঁচটা সাধারণ মানুষের থেকে আলাদা হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ মানুষের সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হয় তাঁদের এমনকি কোনো কাজেও তাঁদের ডাকা হয় না ।
এইসব অবহেলিত মেয়েদের নিয়ে এমনটা কী কেউ ভেবেছিল কখনও? বোধহয় এই প্রথম। ‘সোনাগাছি’র সেই মেয়েদের এখনও সমাজ বেশ কিছুটা অন্য চোখেই দেখে। কিন্তু ডিজাইনার সুজয় দাশগুপ্তের চোখে ‘সোনাগাছি’র প্রমিলা বাহিনী অনন্য। সুজয়ের সৌজন্যেই সোনাগাছি থেকে র্যাম্পে উঠে এলেন সেই মেয়েরা এবং পরিচিত পেলেন হাজার হাজার মানুষের সামনে, যা তাদের কষ্টময় জীবনে একটু আনন্দের ছোঁয়া এনে দেয়।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত হয় দেরাদুন ফ্যাশন উইক। আর সেখানে বাংলার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন ডিজাইনার সুজয় দাশুগুপ্ত। নিজের ‘বারবনিতা’ কালেকশন তুলে ধরেন কলকাতার ডিজাইনার সুজয় দাশগুপ্ত।

তাঁর প্রজেক্টের অন্যতম কেন্দ্রই ছিল রেড লাইট এরিয়ার সেই নারীরাই।

বিভিন্ন রকম সাজে দেখা যায় সেইসব মেয়েদের। কেউ সেজেছেন সুতিতে, কেউ খাদি, কেউ বা মসলিন ও চান্দেরিতে। মেকআপ এবং ড্রেসিংয়ের পর এককথায় তাঁদের লাগছিল অনবদ্য।

চিরাচরিতভাবে শাড়ি না পড়ে এখানে শাড়িকে অন্যভাবে শোকেস করা হয়েছিল যা সত্যিই আধুনিক এবং দৃষ্টিনন্দন লাগছিল।

শুধুমাত্র শাড়িতেই আটকে ছিলেন না মডেলরা, সুজয়ের কালেকশনের স্পেশাল ধুতি-কুর্তাতেও দেখা যায় মডেলদের।

এই প্রজেক্টের কাজ শুরুর আগে ডিজাইনার সুজয় দাশগুপ্ত সোনাগাছির মেয়েদের জীবনযাত্রা নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন।

দেরাদুন ফ্যাশন উইকে শো-ডিরেক্টর ছিলেন অজেন্দ্র গৌতম, স্টাইলিংয়ের দায়িত্বে ছিলেন অতুল আনসাল, জাভেদ আনজুম।

এই ফ্যাশন শো-তে ক্যামেরা লেন্সের পিছনে দায়িত্বে ছিলেন সোনু ভাট।

সবশেষে বলা যেতেই পারে, যে মেয়েদের বাড়ির উঠোনের মাটিতে মূর্ত হয়ে ওঠেন দেবী দুর্গা, সেই বাড়ির মেয়েরা কী আর পিছিয়ে থাকে! সেটাই প্রমাণ করলেন ওঁরা।

Source – Zee ২৪ ঘণ্টা