এখন তো যুদ্ধ চলছে ৬০ ন্যানোমিটারের একটা ভাইরাসের বিরুদ্ধে। যে যুদ্ধ জিততে হলে ঘরে থাকতে হবে, পকেটে পয়সা না থাকলে খাবার জুটবে কিনা তা নিয়েও ঘোর অনিশ্চিয়তা। হয়ত জুটবেই না। করোনা সামলাতে তৎপর সরকার কি ১৩০ কোটি পেটের হিসেব রাখতে পারে এখন! এক বেদনাদায়ক ভিডিও ভাইরাল হল সোশ্যাল মিডিয়ায়। নাড়া দিয়ে গেল নেটিজেনদের। আগ্রার রামবাগ চৌরাহা এলাকায় রাস্তার ছবি এটি।
ঘটনা আগ্রার। ভালোবাসার সৌধ তাজমহল থেকে মাত্র ৬ কিলোমিটার দূরের এক রাস্তায় হঠাতই উল্টে গেল দুধ বোঝাই গাড়ি। রাস্তায় গড়িয়ে গেল অনেকটা দুধ। অন্য সময় হলে কী হত বলা মুশকিল, কিন্তু এখন তো যুদ্ধ চলছে ৬০ ন্যানোমিটারের একটা ভাইরাসের বিরুদ্ধে।
রাস্তার মাঝ দিয়ে যেন দুধের নদী বয়ে চলেছে। আর সেই দুধ পান করতে জড়ো হয়েছে বুভুক্ষ ৪-৫ সারমেয়। শুনশান রাস্তা। তাদের তাড়িয়ে দেওয়ার মতো মানুষজনও সেরকম নেই। তাই অনেকটা নিশ্চিন্তেই দুগ্ধ পান করছে সারমেয়রা। হঠাতই তাদের সঙ্গে দেয় এক ব্যক্তি। চেহারায় স্পষ্ট দারিদ্রের ছাপ। একটা ছোট্ট হাঁড়িতে রাস্তা থেকেই আঁচিয়ে তুলে নিতে শুরু করলেন দুধ। একটু দূরে তখনও দুধ খেয়ে চলেছে সারমেয়রা। খিদে মেটাতে প্রয়োজনে রাস্তায় গড়ানো দুধের পাশেই বসে পড়তে হবে। পথকুকুরদের দলের সঙ্গেই ভাগ করে নিতে হবে সেই দুধ। হাতের তালুতে দুধ তুলেই চালান করে দিতে হবে পেটের ভিতর। বলতে হবে, ‘এই পেয়েছি, আবার কত!’
স্থানীয় সূত্রে খবর, এদিন সকালে মোটরসাইকেলে বড় ক্যান বেঁধে দুধ নিয়ে যাওয়ার সময়ে রাস্তায় দুর্ঘটনার কবলে পড়েন এক দুধ ব্যবসায়ী। সেই সময়েই দুধের ক্যান ফেটে তা রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে। তার কিছুক্ষণ পরেই ঘটে এমন ঘটনা। ভিডিও তে অবশ্য এই ভদ্রলোক একটি পাত্রে তুলে নিচ্ছেন দুধ। বাড়িতে হয়ত অপেক্ষা করছে ফুটফুটে একটা ছোট্ট সন্তান। খাবার ভাগ হয়ে যাচ্ছে দেখে কুকুরদলের চিৎকারেও অবিচল সেই মানুষটা। দু’তরফই যেন বলছে, ‘অল্পেতে স্বাদ মেটে না, এ স্বাদের ভাগ হবে না’!
দেখুন সেই ভিডিও –
Lockdown Impact:
इंसान और जानवर साथ साथ दूध पीने लगे।
आज अगरा के रामबाग चौराहे पर एक दूध वाले की दूध की टंकी गिर गयी।फिर क्या हुआ खुद देखिए। pic.twitter.com/OWvNg8EFIe— Kamal khan (@kamalkhan_NDTV) April 13, 2020
ভিডিওটি লকডাউনের সময়ে দুঃস্থদের করুণ অবস্থার প্রতীক হিসাবে ব্যাখ্যা করেছেন অনেকে। আবার অনেকে লকডাউনের উর্ধ্বে ভারতের সামগ্রিক দারিদ্রের ছবিটি তুলে ধরছে এই ভিডিয়ো- এমন মত প্রকাশ করছেন নেটিজেনরা। ঘটনাস্থলে উপস্থিত দুই ব্যক্তি ভিডিওটি করেন। তারপরেই তা ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। স্থানীয় জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান, এ বিষয়ে তাঁদের কিছু জানা নেই। তাঁরা জানান ঘটনাস্থল থেকে কাছেই থানাতে দুঃস্থদের জন্য খাবারের আয়োজন করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও এই ছবি দুর্ভাগ্যজনক।