ইন্দোনেশিয়ার কেপুহ্ গ্রামে এক অলৌকিক ঘটনা ঘটে চলেছে লকডাউনের মধ্যেই। রাস্তায় বেরলে হুট করে সামনে ঝাঁপিয়ে পড়ছে একটি অবয়ব। সাদা কাপড়ে ঢাকা শরীর ও মুখ। তারপর পূর্ণিমা চাঁদের নীচে যেন মিলিয়ে যাচ্ছে। পরনে থাকে সাদা পোশাক। চোখে কাজল। মুখও ধবধবে সাদা। নিশুতি রাতে ফাঁকা রাস্তায় যদি সাদা পোশাকে হঠাৎ হাতছানি দেয়, তা হলে শিরদাঁড়া দিয়ে শীতল স্রোত বয়ে যায় সকলেরই। অশরীরীর প্রতি মানুষের এই ভয়কেই কাজে লাগাচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার কেপু গ্রাম।
এই ভূতের আমদানি করেছে স্থানীয় প্রশাসনই। গ্রামের যুব সংগঠন পুলিশের সঙ্গে কথা বলে এই উদ্যোগ নিয়েছে। যুব সংগঠনের নেতা বলছেন, আমরা একটু আলাদা ধরনে কাজটা করতে চেয়েছিলাম এবং আলাদা রকমের প্রভাব ফেলতে চেয়েছিলাম।

করো’না ভাই’রাসের সংক্রমণ থেকে সাধারণ মানুষকে বাঁচাতে চাইছে প্রশাসন। কিন্তু অনেকেই ঘরে না থেকে বেরিয়ে পড়ছেন। যেমন ইন্দোনেশিয়ার কেপুহ গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয় প্রশাসন তাই এই পোকং নিয়ে এসেছে। স্থানীয় ভাষায় পোকং-এর অর্থ ভূত। এই গ্রামের মানুষ এখনও করো’ন ভাই’রাস সম্পর্কে সচেতন নন। তাই তাঁদের ঘরে রাখার জন্য গ্রামরক্ষী বাহিনীর কিছু সদস্যকে ভূত সাজানো হয়েছে। তাঁরা শরীরে সাদা কাপড় জড়িয়ে, মুখে পাউডার মেখে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। আর এতে নাকি কাজও হচ্ছে। মানুষ এখন আগের থেকে কম বাইরে বার হচ্ছেন।
প্রথমদিকে হিতে বিপরীত হয়ে গিয়েছিল। ‘পোকং’ রাস্তায় বেরলে তাদের দেখতেই রাস্তায় জমা হচ্ছিল লোক। তারপর পরিকল্পনায় বদল আনা হল। আচমকা হানা দিয়ে আচমকাই মিলিয়ে যাচ্ছে ‘পোকং’ বেশী গ্রামের স্বেচ্ছাসেবকরা। ঘটনার সত্যতা বিচার করতে রয়টার্স সম্প্রতি ওই গ্রামে গিয়েছিল। সত্যিই সন্ধ্যের পর বাড়ি থেকে কেউ বেরচ্ছেন না। মহিলা ও শিশুরা গ্রহবন্দি করে নিয়েছেন নিজেদের। পুরুষরা কাজে বেরলেও বাড়ি ফিরে আসছেন তাড়াতাড়ি। সন্ধ্যের পর শুনশান কেপুহ্ গ্রাম।
An Indonesian village uses 'ghosts' to make people stay at home https://t.co/o4pHwSIJnT pic.twitter.com/tXYrjIeBKU
— Reuters (@Reuters) April 14, 2020
প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো করো’না ভাই’রাসের সংক্রমণ রুখতে লকডাউন ঘোষণা করেননি। বদলে শুধুই মানুষকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে বলেছেন। অথচ এশিয়ার মধ্যে চিনের পরে ইন্দোনেশিয়াতেই করো’না ভয়’ঙ্কর প্রভাব ফেলেছে। ইন্দোনেশিয়ায় এখনও পর্যন্ত ৪,৫৫৭ জন করো’না ভাই’রাসে আক্রান্ত হয়েছেন, মৃ’ত্যু হয়েছে ৩৯৯ জনের। সাবধান না হলে এখানে ১,৪০,০০০ মানুষের মৃ’ত্যু হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন দেশটির বিশেষজ্ঞরা।