এইসব বলিউড তারকাদের প্রেম বিচ্ছেদের কাহিনী হইচই ফেলে দিয়েছিল গোটা দেশে

0
609

প্রেমের সার্থকতা কি শুধু মিলনেই নাকি বিচ্ছেদেও প্রেমের সার্থকতা বজায় থাকে, এই নিয়ে তর্ক চলছে বহু যুগ আগে থেকেই। চলচ্চিত্রে নায়ক-নায়িকার বিচ্ছেদের কাহিনী দেখলে দর্শক অশ্রুসিক্ত হয়ে ওঠে। একইভাবে বাস্তব জগতেও নায়িকাদের জীবনে প্রেম বিচ্ছেদের তালমাটাল কাহিনী আছে। বলিউড তারকা যাঁদের সম্পর্কের টানাপোড়েন আর ব্রক আপ গোটা দেশে খবরের শিরোনাম হয়ে উঠেছিল হইচই ফেলে দিয়েছিল বলিউডে।

১। সলমান খান ও ঐশ্বরিয়া রায়

এই দুই জুটির বিখ্যাত প্রেমের সূচনা হয় ১৯৯৯ সালের সঞ্জয় লীলা বানসালির “হাম দিল দে চুকে সানাম” মুভির শুটিং স্পট থেকে। ১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এই দুই জুটিকে একসঙ্গে দেখা গেলেও শেষ পর্যন্ত এই প্রেম ব্যর্থ হয়েছে। এই ব্রেকআপের পেছনে ঐশ্বরিয়ার বক্তব্য, সলমান নাকি খুব সন্দেহ প্রবণ। এই কারণে শাহরুখ খানের সাথে “চলতে চলতে” সিনেমার অভিনয় করতে পারেননি। তাছাড়া ঐশ্বরিয়ার বাবা-মাও এই সম্পর্কটা নিয়ে ঘোর আপত্তি করেছিল। ২০০০ সালে ঐশ্বরিয়া একটা সাক্ষাৎকারে বলেন আমাদের মার্চ মাসে ব্রেকআপ হয়ে যায় তারপর সলমানের অকথ্য রোষের মুখে পড়তে হয়েছে আমাকে। এরপর ঐশ্বরিয়াকে কিছুদিন বিবেকের সাথে দেখা যায়। তারও বেশ কিছুদিন পর অভিষেকের প্রেমে পড়েন এই অভিনেত্রী এবং তড়িঘড়ি করে বিয়েটাও সেরে ফেলেন। এই বিয়েটা সত্যিই সলমানের কাছে খুবই কষ্টের ও বেদনাদায়ক।

২। অভিষেক-করিশ্মীর ব্রেক আপ

বচ্চন পরিবারের বধূ হতে চলেছেন করিশ্মী এ খবর শোরগোল ফেলে দিয়েছিল বলিউডে। ফিল্মের সেটেই দুজনেপ আলাপ। বেশ কয়েকদিন তাঁরা ডেটিংও করেছেন। ২০০২ সালে তাঁদের এনগেজমেন্টও হয়ে গিয়েছিল। তার ৫ বছর পর তাঁদের সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হয়। জয়া বচ্চন এবং করিশ্মা কাপুরের মা ববিতার সম্পর্কের তিক্ততার কারণেই নাকি তাঁদের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল বলে শোনা যায়। শোনা যায় করিশ্মী তখন প্রতিষ্ঠিত নায়িকা। অভিষেক তখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলিউডে। মেয়ের ভবিষ্যতের কথা ভেবে নাকি সম্পত্তি দাবি করেছিলেন ববিতা। তাতে রাজি হননি জয়া। তারপরেই সম্পর্ক ভেঙে যায় অভিষেক ও করিশ্মার।

৩। অক্ষয় ও শিল্পা শেট্টি

অক্ষয় ও শিল্পা শেট্টি বলিউডে হেরে যাওয়া প্রেমের আরেকটি উদাহরণ। এই জুটি বলিউডে একসঙ্গে বেশ কিছু সিনেমাতে অভিনয় করেছেন। অক্ষয় শিল্পা ছাড়াও রবীনা ট্যান্ডন, মমতা কুলকার্নি সহ বেশকিছু অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। শিল্পার কাছে এই তথ্য বেশিদিন অজানা থাকে নি ফলে তাদের ব্রেকআপ হয়ে যায়। পরে অক্ষয় টুইংকেল খান্নাকে এবং শিল্পা রাজ কুন্দ্রাকে বিয়ে করেন। দুজনেই খুব সুখে সংসার করছেন।

৪। শাহিদ-করিনার ব্রেকআপ

নবাব ঘরনী করিনা কাপুরের সঙ্গে শাহিদ কাপুরের সম্পর্কের ভাোঙনও শোরগোল ফেলে িদয়েছিল বলিউডে। করিনা শাহিদ কাপুরের সঙ্গে সম্পর্ক কখনও অস্বীকার করেননি। কফি উইথ করনের ইন্টারভিউতে তার ইঙ্গিতও দিয়েছিলেন। বলিউডে শোনা যাচ্ছিল শাহিদ করিনার ব্রেক আপের খবর। কারণটা ছিলেন প্রিয়াঙ্কা চোপড়া। এমনই খবর মিলেছিল তখন। পরে টসনের সেটে সইক করিনাকে প্রপোজ করেন তখনই বদলে গিয়েছিল পুরো কাহিনী। একে অপরের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিষোদ্গার করতে শুরু করেন।

৫। বিপাশা বসু ও জন আব্রাহাম

বহুদিন ধরেই এই জুটি চুটিয়ে প্রেম করেন। পরে একসময় একে অপরের ওপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেন। বিপাশা একটি সাক্ষাৎকারে বলেন জন আমাকে ধোঁকা দিয়েছে। কিন্তু পরবর্তী সময়ে জন বলেন হলিউড অভিনেতার সাথে বিপাশার সম্পর্ক আছে।

৬। দীপিকা-রণবীর কাপুরের ব্রেকআপ

বি-টাউনে সবচেয়ে জনপ্রিয় জুটি বলা হয় দীপিকা পাড়ুকোণ ও রণবীর কাপুরকে। রণবীরের নামে নিজের ঘাড়ে একটা ট্যাটুও তৈরি করে ফেলেছিলেন দীপিকা। সব ঠিক থাকলেও অজব প্রেম কি গজব কাহিনীর শ্যুটিংয়ের ক্যাটরিনার সঙ্গে রণবীরের ঘনিষ্ঠতা মেনে নিতে পারেননি দীপিকা। সেখান থেকেই শুরু হয় তাঁদের সম্পর্কের ভাঙন। যদিও ব্রেক আপের পরেও তাঁরা একসঙ্গে ছবি করেছেন।

৭। রাজ কাপুর ও নার্গিস

রাজ কাপুর ও নার্গিসের প্রেম সত্যিই অনেক দুঃখজনক। রাজ কাপুর ছিল বলিউডের শক্তিশালী অভিনেতা আর নার্গিস বুদ্ধিমান ও সুন্দরী অভিনেত্রী। আওয়ারা, ফোর টুয়েন্টি সহ অনেক সিনেমায় তারা একত্রে কাজ করেছিলেন। রাজ কাপুর ছিলেন বিবাহিত কিন্তু তারপরেও তাদের এই প্রেমের কাহিনী খুব দ্রুতই বলিউডে চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত স্ত্রী কৃষ্ণ রাজ কাপুর ও সন্তানদের উপেক্ষা করতে পারেননি রাজ কাপুর। নার্গিস ও থেমে থাকেনি তার জীবনে সুনীল দত্ত এসেছিল। “মাদার ইন্ডিয়া” সিনেমার শুটিং স্পট থেকে নার্গিসকে রক্ষা করার পর তিনি সুনীল দত্তের প্রেমে পড়েন ও কিছুদিনের মধ্যে তাদের বিয়ে হয়ে যায়। এটি সত্যিই হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া একটি প্রেমের গল্প।

৮। হৃত্বিক-সুজনের ব্রেকআপ

শৈশবের প্রেম। প্রথম সিনেমা হিট করার পরেই বিয়ের পিড়িতে বসেছিলেন হৃত্বিক। সুজেন খানের সঙ্গে প্রেমে মশগুল ছিলেন তিনি। দুই সন্তান হওয়ার পরে তাঁদের দাম্পত্যে চিড় ধরেনি। প্রায় দীর্ঘ ১২ বছর পর তাঁদের বিচ্ছেদ হয়। সুজেনই বিচ্ছেদ দাবি করেছিলেন। কঙ্গনা রানাওয়াতের সঙ্গে হৃত্বিকের প্রেমের কাহিনী শোরগোল ফেলে দিয়েছিল। তারইমাঝে আবার সুজেন খানের সঙ্গে অর্জুন রামপালের সম্পর্ক রয়েছে বলে গুঞ্জন শুরু হয়।

৯। মধুবালা ও দিলীপ কুমার

মধুবালা ও দিলীপ কুমারের প্রেম ছিল সেই সময়ের এক হৃদয় নাড়িয়ে দেওয়া প্রেম। দিলীপের আসল নাম মোহাম্মদ ইউসুফ খান। সেই সময়কার বলিউড অভিনেতা দিলীপ কুমার ও সুন্দরী অভিনেত্রী মধুবালা জড়িয়ে পড়েন একে অপরের প্রেমে। তাড়াতাড়ি করে তাদের এনগেজমেন্টও হয়ে যায়। এরপর বি আর চোপড়ার “নয়া দৌড়” সিনেমায় এই দুই জুটি চুক্তিবদ্ধ হন। কিন্তু মধুবালার বাবা তাকে দিলীপের সাথে কাজ করতে বারণ করেন। ফলে মধুবালা সিনেমায় অভিনয় করতে অস্বীকার করায় তাকে রাজি করানোর দায়িত্ব পড়ে দিলীপের ওপর। দিলীপ হাজার বোঝানোর পরেও মধু এই সিনেমা করেন না। তখন দিলীপ তাকে বলে তোমাকে পুরোপুরি সিনেমা ছেড়ে দিতে হবে তবেই আমি তোমাকে বিয়ে করব। তখন মধুবালা তাকে বলেন আমার বাবার কাছে তোমাকে ক্ষমা চাইতে হবে তবেই আমি তোমার শর্তে রাজি। কিন্তু এই বারও দিলীপ বলে দেন আমি কোনভাবেই ক্ষমা চাইবো না এই ভাবেই তাদের মধুর সম্পর্কের ব্রেকআপ হয়ে যায়। পরে অবশ্য মধুবালার বিয়ে হয়। মধুবালা একটি সাক্ষাৎকারে জানান দিলিপের সঙ্গে সায়রা বানুর বিয়ের সময় আমার খুবই কষ্ট হয়েছিল।

১০। রেখা অমিতাভ

রেখা অমিতাভের প্রেম খুবই রহস্যজনক প্রেমের গল্প। অমিতাভ সেই সময়কার নামকরা অভিনেতা আর লেখা হলো দক্ষিণের অভিনেত্রী। ইয়াশ চোপড়ার “সিলসিলা” সিনেমা দিয়ে রেখার বলিউডে প্রবেশ। “আন্দাজ” সিনেমার পর থেকে তাদের প্রেমের গুঞ্জন শোনা যায়। এরইমধ্যে অমিতাভ জয়াকে বিয়ে করেন। এই জুটি একসঙ্গে অভিনয় করেছেন খুন পাসিনা, সোহাগ, মুকাদ্দার কা সিকান্দার, রাম বলরাম, সিলসিলা ইত্যাদি ছবিতে। একবার ঋষি কাপুরের বিয়ের অনুষ্ঠানে রেখা সিঁথিতে সিঁদুর পরে উপস্থিত হন। পরে জয়া তাকে ডিনারের আমন্ত্রণ করেন নিজের বাড়িতে। সেখানে তিনি রেখাকে বলেন আগে যা হয়েছে সেসব ভুলে যেতে।